বিটরুটকে (Beetroot) সাধারণ ভাষায় আমরা বিট বলে থাকি। এর বৈজ্ঞানিক নাম BETA VULGARIS। লাল বা বেগুনি রংয়ের গোলাকার আকর্ষণীয় সবজি বিটরুট। গবেষণায় দেখা গেছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম থাকায় এটি স্নায়ু এবং পেশিকে সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় বিটরুট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। নিচের আলোচনায় আমরা বিটরুট এর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সর্ম্পকে জানতে পারব।
বিট অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি সবজি। প্রাচীন মিশরীয় বা রোমানরা শাকসবজি হিসেবে উৎপাদন করত বিট, আর মধ্যযুগীয়রা বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে নিস্তার পেতে নিয়ম করে বিট খেত। গবেষণায় বলছে, ভিটামিন এ বা বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন সি বা এসকরবিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি-৬ এর মতো ভিটামিন মেলে বিটে। এছাড়াও সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,পটাশিয়াম,ক্যালসিয়াম,ম্যাঙ্গানিজ এর মত খনিজ উপাদান থাকে বিটে। বিটের মধ্যে থাকা নাইট্রেট মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং এর মধ্যে থাকা ফলিক এসিড বাড়ায় ফুসফুসের কার্যক্ষমতা।
১০০ গ্রাম বিটরুটে ক্যালরি রয়েছে ৪৪ ক্যালোরি,কার্বোহাইড্রেট রয়েছে ৮ গ্রাম, ফাইবার রয়েছে ৩ গ্রাম, ফ্যাট রয়েছে মাত্র 0.২ গ্রাম, প্রোটিন রয়েছে ১.৭ গ্রাম। সব রকমের পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সবজি বিটরুটকে বলা হয় ম্যাজিক্যাল খাবার।
অনেকেই প্রশ্ন করেন বিটরুট কাঁচা খাওয়া যায় কিনা,অবশ্যই বিটরুট কাঁচা খাওয়া যায়। বিটরুট ছোলাসহ খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। বিটরুট সাধারণত জুস, সালাদ, রোস্টেড বা সু্্যপ করে খাওয়া যায়। বিটরুটকে যদি আপনি আপনার শারীরিক সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহার করতে চান তাহলে বীটরুট খাওয়ার সঠিক নিয়ম হল বিটরুটের জুস হিসেবে খাওয়া। এর কারণ আপনি যখন সালাদ হিসেবে খাবেন, সালাদে যত পরিমান আপনি বিট খেতে পারবেন তাতে যত পুষ্টি পাবেন জুস করে খেলে তার থেকে বেশি পুষ্টি শরীরে প্রবেশ করবে। বিট জুস অবশ্যই চিনি ছাড়া খেতে হবে। তাই নিয়ম করে প্রতিদিন এক গ্লাস বিট জুস পান করুন।
এছাড়া বিটরুটের রংকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন খাবার কে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বিটের নির্যাস বা বিটের জুস ব্যবহার করা হয়। একটি সুষম খাদ্যের অংশ হিসাবে প্রতিদিন একটি ছোট থেকে মাঝারি আকারের বিটরুট (প্রায় ১৫০ গ্রাম) খাওয়া নিরাপদ বলে মনে করা হয়।
বিটরুটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৬৬। তাই ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিটরুট নিরাপদ নাও হতে পারে। কিন্তু ১০০ গ্রাম বিটরুটের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে মাত্র ৮ গ্রাম|। কার্বোহাইড্রেট ৮ গ্রাম থাকে বলে বিটরুটের গ্লাইসেমিক লোড মাত্র ৫। তাই ডায়াবেটিস রোগী অবশ্যই বিটরুট খেতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে, বিটরুটে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে তাই তাদের নিত্যদিনের খাদ্য তালিকায় সালাদ হিসেবে সীমিত মাত্রায় যদি বিটরুটকে যুক্ত করতে পারেন তাহলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ইনসুলিন সেনসিটিভিটির মতো সমস্যার সমাধান পেতে পারেন। এছাড়া খাবার খাওয়ার পর যাদের রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় সেই সমস্যাও ধীরে ধীরে কমে আসতে দেখা যায়।
পুষ্টিবিদদের মতে এলার্জির সমস্যায় নিয়ম মেনে খেতে হবে বিট। বিটরুটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ফলিক এসিড যা একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য অত্যন্ত জরুরি, কিন্তু গর্ভবতী মায়েরা যদি নিয়মিত বিটরুটকে হেলথ সাপ্লিমেন্ট হিসেবে খেতে চান তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে। বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে অক্সালেট রয়েছে এই অক্সালেট আমাদের শরীরে বিভিন্ন স্টোন ফরমেশন করতে পারে তাই যারা গলব্লাড স্টোন বা কিডনি স্টোন এর মত সমস্যায় ভুগছেন সে সমস্ত মানুষ বিটরুট না খেলেই ভালো হয়।
বিভিন্ন প্রকার ফল ও সবজির উপকারিতা জানতে ভিজিট করুন TEST FOOD BD
গাজর (Carrot) খুবই জনপ্রিয় একটি শীতকালীন সবজি হলেও এখন সব মৌসুমে কমবেশি পাওয়া যায়। গাজর…
ওটস (Oats) হলো এক ধরনের পূর্ণ শস্য যা প্রধানত Avena sativa উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায়।…
মিষ্টি আলু (Sweet Potato) একটি মিষ্টি স্বাদের কন্দজাতীয়,স্টার্চযুক্ত, সবজি। যা মূলত এর মিষ্টি স্বাদ ও…
চিয়া বীজ মরুভূমিতে জন্মানো সালভিয়া হিস্পানিকা উদ্ভিদের বীজ। চিয়া বীজ মধ্য ও দক্ষিণ মেক্সিকোতে অবস্থিত…